পার্বত্য এলাকায় ম্যালেরিয়া আক্রান্তের হার কমছে

172

ঢাকা, ২৪ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) : সরকারের নানা মুখি পদক্ষেপের কারণে পর্বত্য এলাকায় ম্যালেরিয়া আক্রান্তের হার কমেছে। দেশের পার্বত্য অঞ্চল বিশেষ করে রাঙ্গামাটিতে বাঙালিদের তুলনায় পাহাড়িরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হন। তবে আগের তুলনায় রাঙ্গামাটিতে ম্যালেরিয়া রোগের আক্রান্তের হার অনেক কমেছে।
জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী, ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে থাকা রাঙ্গামাটি জেলায় গত তিন বছরে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে কারো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। ২০০২ সালে এই জেলায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১৪৩ জন মারা যায়। ২০১২ সালে এই সংখ্যা নেমে আসে একজনে। ২০১৩ সালে দুজন ও ২০১৬ সালে একজনের মৃত্যু হলেও ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল (জানুয়ারি-মার্চ মাস) পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি।
এসব বিষয়ে রাঙ্গামাটি জেলার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. নিহার রঞ্জন নন্দী বাসসকে জানান, আমরা এতোদিন পার্বত্য জেলায় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছি। এবার আমাদের লক্ষ্য হলো তা নির্মূল করা। রাঙ্গামটিতে ম্যালেরিয়ার ঝুকিঁ অনেক কমে এসেছে। বিগত ৩ বছরে একজন ও ম্যালেরিয়াতে আক্রন্ত হয়ে মারা যায়নি। শুধু রাঙ্গামাটি নয় পার্বত্য তিন জেলায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ কমে এসেছে। পার্শ্ববর্তী ভারত ও মায়ানমার সীমান্ত ঘেঁষা হওয়ায় এখানে নির্মূল করাটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আশা করি, আমরা সফলতার মুখ দেখবো।
রাঙ্গামাটির ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচির সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. এন্ড্রু বিশ্বাস জানান, জেলার ১০টি উপজেলার মধ্যে চারটিতে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বেশি। এগুলো হলো- বিলাইছড়ি, বাঘাইছড়ি, জুড়াছড়ি ও বরকল। জেলায় ম্যালেরিয়ায় মোট আক্রান্তের মধ্যে ৩১ শতাংশ ছিল বিলাইছড়ি, ২৭ শতাংশ বাঘাইছড়ি, ১৭ শতাংশ জুড়াছড়ি এবং ৯ শতাংশ ছিল বরকলে।
তিনি জানান, বিলাইছড়িতে ২০১৭ সালে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল তিন হাজার ১৫৫ জন। ২০১৮ সালে এ সংখ্যা ছিল ৯২৬ জন। বাঘাইছড়িতে এ সংখ্যা যথাক্রমে এক হাজার ৬৮৬ ও ৮২৪, জুড়াছড়িতে ৮৭৩ ও ৫১৪ এবং বরকলে ৪৭৫ ও ২৭৮ জন। অন্য দিকে আক্রান্তের দিক থেকে সবচেয়ে কম রয়েছে সদর উপজেলায়। সেখানে ২০১৭ সালে ৭৩ ও ২০১৮ সালে ২৫ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়। জেলার ৪৯টি ইউনিয়নে এক হাজার ৫৫৫টি গ্রামে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের হার কমছে।
জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. এম এম আক্তারুজ্জামান বাসসকে জানান, দেশের তিনটি পার্বত্য জেলা ম্যালেরিয়ার চূড়ান্ত ঝুঁঁকিতে রয়েছে। ম্যালেরিয়ার সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যসেবা আরো কীভাবে সীমান্তবর্তী এলাকায় বিস্তৃত করা যায় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আশা করছি, ২০৩০ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া নির্মূলের যে টার্গেট আমাদের রয়েছে ধাপে ধাপে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা সেই লক্ষ্যপূরণ করতে পারব।