বাসস ক্রীড়া-১১ : সৌম্যর রেকর্ড ডাবল সেঞ্চুরিতে প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন আবাহনী

294

বাসস ক্রীড়া-১১
ক্রিকেট-প্রিমিয়ার লিগ
সৌম্যর রেকর্ড ডাবল সেঞ্চুরিতে প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন আবাহনী
সাভার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) : বাঁ-হাতি ওপেনার সৌম্য সরকারের রেকর্ড ডাবল-সেঞ্চুরিতে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের এবারের আসরের শিরোপা জিতে নিলো আবাহনী লিমিটেড। সৌম্যর অপরাজিত ২০৮ রানের সুবাদে আজ সুপার সিক্সে নিজেদের শেষ ম্যাচে আবাহনী ৯ উইকেটে হারিয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে। ফলে ১৬ খেলায় ১৩ জয় ও ৩ হারে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে ২০তম বারের মত প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জিতে নেয় আবাহনী। আবাহনীর মত শিরোপা জয়ের দৌড়ে ছিলো লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জও। সুপার সিক্সে নিজেদের শেষ ম্যাচে রূপগঞ্জ ৮৮ রানে হারায় প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে। ফলে রূপগঞ্জেরও পয়েন্ট আবাহনীর সমান ২৬ হয়। কিন্তু রান রেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে এবারের প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জয়ের মুকুট পড়ে আবাহনীই। এবারের আসর শেষে আবাহনীর রান রেট ০.৮৬৬৬, রূপগঞ্জের ০.৫১৭।
জিতলেই শিরোপা জয় নিশ্চিত আবাহনীর। এমন সমীকরন নিয়ে সাভারের বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে শেখ জামালের মুখোমুখি হয় মাশরাফি-সাব্বির-সৌম্যরা। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্বান্ত নেয় শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। কিন্তু ব্যাট হাতে ভালো শুরু করতে পারেনি তারা। ৮৫ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে শেখ জামাল। ইমতিয়াজ হোসেন ১৫, ফারদিন হাসান ৩৪, রাকিন আহমেদ ১, নাসির হোসেন ১৩ ও অধিনায়ক নুরুল হাসান ১৭ রান করেন। এরমধ্যে আবাহনীর পেসার মাশরাফি বিন মর্তুজা ২টি উইকেট নেন।
১৭তম ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে মহাবিপদে পড়ে শেখ জামাল। এই পরিস্থিতি শক্ত হাতে মোকাবেলা করেন ছয় নম্বরে নামা তানবীর হায়দার ও ইলিয়াস সানি। দলকে ১৭৬ রানে টেনে নিয়ে যায় এই জুটি। ৯১ রানের জুটি গড়েন তারা। ৪৬ বলে ৪৫ রান করে আউট হন সানি।
সানির বিদায়ের পর ক্রিজে তানবীরের সঙ্গী হন মেহরাব হোসেন। আবাহনীর বোলারদের সামনে নিজেদের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেন তারা। সফলও হয়েছেন দু’জন। ফলে এই জুটি দলকে উপহার দেয় ৯৮। ৩৬ বলে ৪৪ রান করা মেহরাবকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙ্গেন আবাহনীর মাশরাফি।
অন্যপ্রান্তে ব্যাট হাতে অবিচল ছিলেন তানবীর। তাই ৪৭তম ওভারের প্রথম বলেই সেঞ্চুরির স্বাদ নেন তিনি। ৯৯তম বলে সেঞ্চুরি করেন তানবীর। সেঞ্চুরির পর মারমুখী মেজাজ ধারন করেন তিনি। তাই পরের ১৬ বল থেকে ৩২ রান তুলে নেন তানবীর। ফলে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩১৭ রানের বড় সংগ্রহ পেয়ে যায় শেখ জামাল। ১০টি চার ও ৬টি ছক্কায় ১১৫ বলে অপরাজিত ১৩২ রান করেন তানবীর। আবাহনীর মাশরাফি ৫৬ রানে ৪ উইকেট নেন।
শিরোপা জিততে আবাহনীর সামনে টার্গেট দাড়ায় ৩১৮ রান। সেই টার্গেটে বেশ সাবলীলভাবে ব্যাটিং শুরু করেন আবাহনীর দুই ওপেনার জহিরুল ইসলাম ও সৌম্য। প্রথম ১০ ওভারেই ৬৫ রান যোগ করেন তারা। দুর্দান্ত শুরুটাকে পরবর্তীতেও ধরে রাখেন জহিরুল-সৌম্য। তাই ১শর পর দলীয় স্কোর দেড়শও নিয়ে যান তারা। ঐসময় ২৪তম ওভার শেষে জহিরুল ৬০ ও সৌম্য ৯০ রানে অপরাজিত ছিলেন। তবে ২৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে চার ও তৃতীয় বলেই ছক্কা মেরে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে সেঞ্চুরি তুলে নেন সৌম্য। ৭৮তম বলে তিন অংকে পা দেন আগের ম্যাচে রূপগঞ্জের বিপক্ষে ১০৬ রান করা সৌম্য।
সেঞ্চুরি করেও দমে যাননি সৌম্য। নিজেদের ইনিংস বড় করেছেন, আবাহনীকে টেনে নিয়েছেন লক্ষ্যের দিকে। ১০৪তম বলে নিজের দেড়শ রানও পূর্ণ করেন সৌম্য। অন্যপ্রান্তে সেঞ্চুরির পথে ছিলেন জহিরুল। এক পর্যায়ে সৌম্য ডাবল ও জহিরুল সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে পৌছে যান। ৪৫তম ওভারের পঞ্চম ডেলিভারিতে নিজের ১২৭তম বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন জহিরুল। এবারের লিগে জহিরুলের এটি তৃতীয় সেঞ্চুরি।
জহিরুলের সেঞ্চুরি পূর্ণ হবার এক বল পরই বাউন্ডারি মেরে ডাবল-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সৌম্য। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে লিষ্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ডাবল-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সৌম্য। তার অনন্য রেকর্ডের পরই থেমে যান জহিরুল। ৪৬তম ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ৩১২ রানে প্রথম উইকেট হারায় আবাহনী। ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১২৮ বলে দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে আউট হন জহিরুল।
জহিরুলের বিদায়ের পর নবম বলেই ছক্কা মেরে ১৭ বল বাকী রেখে আবাহনীর জয় ও শিরোপা নিশ্চিত করেন সৌম্য। ১৪টি চার ও ১৬টি ছক্কায় ১৫৩ বলে অপরাজিত ২০৮ রান করেন সৌম্য। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসও এটি। সৌম্যর সাথে অপরপ্রান্তে ৭ বল মোকাবেলা করে শুন্য রানে অপরাজিত ছিলেন সাব্বির রহমান। ম্যাচ সেরা হয়েছেন সৌম্য।
বাসস/এএমটি/১৯৩৫/-নীহা