বাসস বিদেশ-৩ : শ্রীলংকায় ইস্টারে বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা ২৯০

183

বাসস বিদেশ-৩
শ্রীলংকা-হামলা
শ্রীলংকায় ইস্টারে বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা ২৯০
কলম্বো (শ্রীলংকা), ২২ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস ডেস্ক) : শ্রীলংকায় চার্চ ও বিলাসবহুল হোটেলে ধারাবাহিক বোমা হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ২৯০ জন প্রাণ হারিয়েছে। এক দশক আগে দেশটিতে গৃহযুদ্ধের অবসানের পর এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতার ঘটনা।
খ্রিষ্টানদের পবিত্র ধর্মীয় উৎসব ইস্টার পালনের দিনে প্রার্থনাকারী ও বিদেশী অতিথিদের কাছে জনপ্রিয় বিলাসবহুল হোটেলগুলো লক্ষ্য করে আটটি সমন্বিত বোমা হামলা চালানো হয়।
সোমবার সকালে পুলিশের এক মুখপাত্র জানান, এই হামলার ঘটনায় আরো ৫শ’ লোক আহত হয়েছে।
এদিকে কলম্বোর প্রধান বিমানবন্দরে একটি বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।
খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
বিস্ফোরণের পরপরই দেশব্যাপী কারফিউ জারি করা হয়েছিল। সোমবার ভোরে কারফিউ তুলে নেয়া হয়।
নগরীর সেন্ট সেবাস্টিয়েন’স চার্চে এখনো নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক সদস্য মোতায়েন রয়েছে। এখানে একটি ভয়াবহ বোমা হামলা চালানো হয়।
শ্রীলংকায় ২ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার মাত্র ছয় শতাংশ খ্রিষ্টান। অতীতেও দেশটির এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর সহিংস হামলা চালানো হয়েছে। তবে এই প্রথম এ ধরনের ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটল।
তাৎক্ষণিকভাবে কোন গোষ্ঠী বা সংগঠন এই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেনি।
তবে পুলিশ সোমবার জানিয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সরকার এর আগে জানিয়েছিল যে, এই হামলার সঙ্গে ‘বিদেশী সংশ্লিষ্টতা’ রয়েছে কিনা তদন্ত কর্মকর্তারা তা খতিয়ে দেখবেন।
পরপর ছয়টি শক্তিশালী বিস্ফোরণ এবং এর কয়েকঘন্টা পর আরো দুটি বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রায় ৪৫০ জন আহত হয়।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই হামলায় নিহতদের মধ্যে তিন ভারতীয়, তিন ব্রিটিশ, দুই তুর্কি ও একজন পর্তুগালের নাগরিক রয়েছে।
নিহতদের মধ্যে ব্রিটিশ ও মার্কিন উভয় পাসপোর্টধারী দুইজন রয়েছে।
শ্রীলংকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘এছাড়াও নয় বিদেশী নাগরিক নিখোঁজ রয়েছে। ২৫টি লাশ সনাক্ত করা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে এরা বিদেশী নাগরিক।’
জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে তাদের একজন নাগরিক রয়েছে।
যেসব চার্চকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয় তাদের মধ্যে কলম্বোর ঐতিহাসিক সেন্ট এন্থনী’স চার্চ রয়েছে। বিস্ফোরণে চার্চের ছাদের অধিকাংশ স্থান উড়ে গেছে।
বিস্ফেরণের পর প্রার্থণাকারীদের ছিন্নভিন্ন দেহ চার্চের মেঝেতে পড়ে থাকে। হতাহতদের রক্তে গির্জার সাদা জমিন রঞ্জিত হয়ে যায়।
শ্রীলংকার পুলিশ প্রধান পুজুত জয়াসুন্দারা ১০ দিন আগেই গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দেশটির ‘বিখ্যাত চার্চগুলোতে’ আত্মঘাতী বোমা হামলার ব্যাপারে শীর্ষ কর্মকর্তাদের সতর্ক করেছিলেন।
সতর্কতাবার্তায় বলা হয়েছিল, ‘একটি বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে যে এনটিজে (ন্যাশনাল তৌহিদ জামা’আত) নামের একটি উগ্রপন্থী সংগঠন বিখ্যাত চার্চ ও কলম্বোয় ভারতীয় হাই কমিশনে আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনা করছে।’
গত বছর বৌদ্ধ মুর্তি ধ্বংসের সঙ্গে শ্রীলংকা ভিত্তিক উগ্রপন্থী মুসলিম সংগঠন এনটিজে জড়িত ছিল।
শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে স্বীকার করেন যে সম্ভাব্য হামলার ব্যাপারে ‘তথ্য ছিল’ এবং ‘কেন আগে থেকেই যথাযথ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি তা খতিয়ে দেখা হবে।’
বাসস/কেএআর/১৩১০/শআ