বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ : রোহিঙ্গা ইস্যুতে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণে জি-৭ নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

186

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১
শেখ হাসিনা-জি-৭-আউটরিচ-রোহিঙ্গা
রোহিঙ্গা ইস্যুতে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণে জি-৭ নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
লা মালবাই, ক্ইুবেক, কানাডা, ১০ জুন, ২০১৮ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বাস্তবায়নে মিয়ানমারের প্রতি চাপ প্রয়োগে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়ার জন্য জি-৭ নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি গতকাল জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের আউটরিচ অধিবেশনে বক্তব্য প্রদানকালে এই আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন ও মানবাধিকার লংঘনের দায়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করারও আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বাস্তবায়নে রাখাইন রাজ্যে কার্যকর পরিবেশ তৈরিতে মিয়ানমারকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। রোহিঙ্গাদের বারবার দেশ থেকে বিতারণ বন্ধ এবং মূল সমস্যার সমাধানে মিয়ানমারকে অবশ্যই কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি বলেন, এক্ষেত্রে আমাদের আরো আন্তর্জাতিক বিশেষ করে জি-৭ দেশগুলোর সমর্থন প্রয়োজন।
শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের সমস্যার মূল মিয়ানমারেই নিহিত এবং তাদেরকেই এর সমাধান করতে হবে। রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফেরত নিতে হবে যেখানে তারা শতশত বছর ধরে বসবাস করে আসছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের অধিকার নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি করেছি। এই প্রক্রিয়া যাতে স্থায়ী ও টেকসই হয় সেজন্য আমরা এতে ইউএনএইচসিআরকে অন্তর্ভুক্ত করেছি।
প্রধানমন্ত্রী রাখাইন এডভাইজরি কমিশনের সুপারিশসমূহ অতিদ্রুত এবং নিঃশর্ত বাস্তবায়নে মিয়ানমারকে রাজি করানো এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ অবরোধ আরোপে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব গ্রহণে কাজ করার জন্য জি-৭ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যাযজ্ঞের অপরাধ অথবা তাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লংঘনের জন্য জবাবদিহিতা ও সুবিচার নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নিতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখের বেশি মিয়ানমারের নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছে এবং তারা নিজ দেশে গণহত্যার মুখোমুখি হওয়ায় জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের জনগণ তাদের বাড়িঘর ও হৃদয় দুর্দশাগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে এবং নিজেদের খাবার রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছে।’
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মোট ১২২টি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিও এবং জাতিসংঘ সংস্থা কক্সবাজারে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের ক্যাম্পগুলোতে কাজ করছে।
তিনি বলেন, সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা আমাদের নিজস্ব সম্পদ থেকে তাদের নিরাপদ আশ্রয়, চিকিৎসাসেবা এবং অন্যান্য মৌলিক সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমরা আসন্ন বর্ষা ও সাইক্লোন মৌসুমের জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গাকে ‘ভাসানচর’ নামে একটি নিরাপদ দ্বীপে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন, এই স্থান বসবাসের উপযোগী, নিরাপদ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় পর্যাপ্ত সুরক্ষা থাকবে। সেখানে বসবাসের পরিবেশ উন্নত হবে এবং জীবিকার সুযোগ থাকবে এবং আমরা সেখানে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করছি।
বাসস/একেএইচ/এসএইচ/এমএবি/১৩৩০/আহো/এমএসআই