মোসাদ্দেকের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে মোহামেডানকে হারালো আবাহনী

442

সাভার, ১৭ এপ্রিল ২০১৯ (বাসস) : অধিনায়ক মোসাদ্দেকের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের সুপার সিক্সে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবকে আজ ৪৫ রানে হারিয়েছে আবাহনী লিমিটেড। লিগ পর্বেও মোহামেডানকে ৬ উইকেটে হারিয়েছিলো আবাহনী। সুপার সিক্সে নিজেদের টানা দ্বিতীয় জয়ে ১৩ খেলায় ১০ জয় ও ৩ হারে ২০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে আবাহনী। সমানসংখ্যক ম্যাচে ৬ জয় ও ৭ হারে ১২ পয়েন্ট নিয়ে সুপার সিক্স টেবিলের ষষ্ঠ ও তলানিতে মোহামেডান। ২০ পয়েন্ট সংগ্রহে থাকায় শীর্ষে থাকা লিজেন্ডস অব রূগপঞ্জের সাথে আবাহনীর ব্যবধান এখন মাত্র ২।
সাভারের বিকেএসপি’র তিন নম্বর মাঠে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় আবাহনী। ইনফর্ম জহিুরুল এ ম্যাচেও ব্যর্থ হন। মাত্র ৪ রান করে ফিরেন তিনি। ভালো শুরু করেছিলেন আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার। কিন্তু ১৭ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। এমন অবস্থায় ৩২ রানে দুই ওপেনারকে হারায় আবাহনী।
শুরুতে ডাবল ধাক্কায় ভড়কে যায়নি আবাহনীর তিন নম্বরে নামা সাব্বির রহমান। পাল্টা আক্রমণ করেন মোহামেডান বোলারদের। মারমুখী মেজাজে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন সাব্বির। সাথে ছিলেন ভারতীয় ওয়াসিম জাফর। সাব্বিরের বিধ্বংসী রুপে, দেখেশুনেই খেলেছেন জাফর। তাই এই জুটির কল্যাণে শতরানে পৌঁছে যায় আবাহনী। কিন্তু তিন অংকে পৌঁছেই বিচ্ছিন্ন হন সাব্বির-জাফর। ৭১ রানের জুটি গড়েন তারা। দলীয় ১০৩ রানে ফিরেন জাফর। করেন ১৯ রান। কিছুক্ষণ পর থামতে হয় সাব্বিরকেও। হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৫৩ বলে ৫টি চার এবং ৪টি ছক্কায় ৬৪ রান করেন সাব্বির।
দলীয় ১০৯ রানে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাব্বির আউট হলে দলের হাল ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মোহাম্মদ মিথুন। পঞ্চম উইকেটে দু’জনে ৯১ রানের জুটি গড়ে দলের স্কোর ২শ’ স্পর্শ করান। কিন্তু মাত্র ২ রানের ব্যবধানে দু’জনই। শান্ত ৩৬ ও মিথুন ৫২ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৬ রান করেন।
৩৬তম ওভারে ২০২ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়েও চিন্তা ভাজ কপালে ছিলো না আবাহনীর। কারন তখনও উইকেটে ছিলেন দুই ইনফর্ম ব্যাটসম্যান অধিনায়ক মোসাদ্দেক ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ইনিংসের শেষ ৮৬ বলে ১০২ রান যোগ করেন মোসাদ্দেক-সাইফউদ্দিন। ফলে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩০৪ রানের সংগ্রহ পায় আবাহনী।
৪টি চারে ৩৫ বলে ৪১ রান করে ইনিংসের শেষ বলে আউট হন সাইফউদ্দিন। তবে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৭ বলে অপরাজিত ৫৪ রান করেন মোসাদ্দেক। মোহামেডানের শফিউল ইসলাম ৩ উইকেট নেন।
আবাহনীর ছুঁড়ে দেয়া ৩০৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে মোহামেডান। আবাহনী বোলারদের তোপের মুখে পড়ে মোহামেডানের টপ-অর্ডার। ২০ রানে ৩ উইকেট হারায় তারা। ওপেনার হিসেবে বোলিং শুরু করে দু’উইকেট নেন মোসাদ্দেক। অনপ্রান্তে একটি উইকেট শিকার করেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
শুরুর ধাক্কাটা সামাল দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন রকিবুল হাসান ও তুষার ইমরান। কিন্তু বেশি দূর যেতে পারেননি তারা। ৪১ রান যোগ করেই বিচ্ছিন্ন হন রকিবুল-তুষার। ১৬ রান করে আউট হন তুষার। এরপর মোহাম্মদ আশরাফুলকে নিয়ে লড়াই শুরু করেন রকিবুল। দারুণ জমে উঠে রকিবুল-আশরাফুলের জুটিটি। দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে গিয়ে দু’জনই হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান।
মারমুখী মেজাজে ব্যাট করা রকিবুল আসরে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌঁছেও যান। কিন্তু রকিবুলের স্বপ্ন চুরমার করে দেন আবাহনীর মাশরাফি। দশটি চার ও তিনটি ছক্কায় ৭৯ বলে ৯৬ রান করা রকিবুলকে শিকার করেন ম্যাশ।
রকিবুল থামলেও দমে যাননি আশরাফুল। দলের রানের চাকা ঘুড়াচ্ছিলেন তিনি। তার সাথে ছিলেন সোহাগ গাজী। কিন্তু দলীয় ২৩০ ও ২৪২ রানে অ্যাশ-সোহাগকে শিকার করেন আবাহনীর মিডিয়াম পেসার সৌম্য সরকার। আর সেখানেই শেষ হয়ে যায় মোহামেডানের ম্যাচ জয়ের আশা। ২১ বল বাকী থাকতে ২৫৯ রানে অলআউট হয় মোহামেডান। আশরাফুল ৬টি চারে ৮৫ বলে ৬৮ ও সোহাগ ২৮ বলে ২৮ রান করেন। আবাহনীর মোসাদ্দেক-মাশরাফি ৩টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন আবাহনীর অধিনায়ক মোসাদ্দেক।