বাসস দেশ-১৩ : জাতীয় জাদুঘরে নবসজ্জিত বাদ্যযন্ত্র গ্যালারি উদ্বোধন

356

বাসস দেশ-১৩
জাদুঘর-বাদ্যযন্ত্র
জাতীয় জাদুঘরে নবসজ্জিত বাদ্যযন্ত্র গ্যালারি উদ্বোধন
ঢাকা, ৯ জুন, ২০১৮ (বাসস) : জাতীয় জাদুঘরে নবসজ্জিত বাদ্যযন্ত্র গ্যালারি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে।
আজ দুুপুরে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই বাদ্যযন্ত্র গ্যালারি উদ্বোধন করেন জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। উদ্বোধনের পর নবসজ্জিত বাদ্যযন্ত্র গ্যালারিটি পুনরায় দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। ছয় বছর আগে জাদুঘরের এই বাদ্যযন্ত্র গ্যালারিটি সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল।
জাদুঘরের সচিব মোহাম্মদ শওকত নবীর সভাপতিত্বে গ্যালারি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভাষণে মহাপরিচালক বলেন, বাদ্যযন্ত্র গানের বাজনা সহযোগী। ছয় বছর বন্ধ থাকার পর জাতীয় জাদুঘরে আজ পুনরায় বাদ্যযন্ত্র গ্যালারি চালু করা হলো। আজ থেকে দর্শকরা আবারও জাদুঘরের এই গ্যালারিতে প্রাচীন আমলসহ গত কয়েক শতাব্দীর বাদ্যযন্ত্র দেখার সুযোগ পাবেন।
তিনি বলেন, আট থেকে বার খ্রীষ্টাব্দে নওগাঁর পাহাড়পুর ও সাত থেকে বার খ্রীষ্টাব্দে কুমিল্লার ময়নামতিতে পাওয়া বিভিন্ন মূর্তির সঙ্গে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এগুলো হচ্ছে, কাঁসর, করাতল, ঢাক, বীণা, বাঁশি, মৃদঙ্গ ও মৃৎভান্ড। দশম শতাব্দীতে রচিত বাংলা ভাষার প্রথম নির্দশন চর্যাপদে গীত, নৃত্য-বাদ্যের উল্লেখ রয়েছে। চর্যার তিনটি পদে মোট সাতটি বাদ্যযন্ত্রের উল্লেখ আছে, এগুলো হচ্ছে, বীণা, পটহ, মাদল, করন্ড, কসালা, দুন্দভি ও ডমরু।
আলোচনায় অংশ নেন, জাদুঘরের ইতিহাস ও শিল্পকলা বিভাগের কীপার ড.স্বপন কুমার বিশ্বাস, শিল্পকলা বিভাগের কীপার নূরে নাসরীন, জাদুঘরের সংরক্ষণ রসায়নিবিদ আকছারুজ্জামান নূরী, শিল্পকলা ও বিশ্বসভ্যতা বিভাগের উপ-কীপার শক্তিপদ হালদার।
শক্তিপদ হালদার বলেন, বাদ্যযন্ত্র সঙ্গীতোপযোগী শব্দ সৃৃষ্টিকারী যন্ত্র। ভারতীয় উপমহাদেশে খননকার্য ও প্রাচীন সাহিত্য থেকে অতি উন্নতমানের এক সাঙ্গীতিক সভ্যতার পরিচয় পাওয়া যায় এবং সেই সূত্রে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের পরিচয় মেলে। সিন্দু সভ্যতায় বেণু, বীণা ও মৃদঙ্গের ব্যবহার ছিল বলে জানা যায়। বৈদিক যুগে দুন্দুভি, ভূমি-দুন্দুভি বেণু বীণা বাদ্যযন্ত্রের প্রচলন ছিল।
কীপার নূরে নাসরীন বলেন, অতীতে বঙ্গদেশে যে সব বাদ্যযন্ত্র ব্যবহৃত হতো সে গুলোর বেশিরভাগই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আবার বর্তমানে অনেক বাদ্যযন্ত্রের আবির্ভাব ঘটেছে। জাদুঘরে নবপর্যায়ে কিছু এই সময়ের বাদ্যযন্ত্রের যুক্ত করা হয়েছে।
ড. স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, প্রথম যে যন্ত্রটিকে বাদ্য হিসেবে বিচেনা করা হয়, তার উৎস ও সময়কাল বিতর্কিত। সর্বপ্রাচীন যে বন্তুটিকে কিছু সংখ্যক বিজ্ঞ বাদ্যযন্ত্র হিসেবে নির্দেশ করেছেন, তা সম্ভবত একটি সাধারণ বাঁশি, যেটির বয়স অনুমান করা হয় প্রায় ৬৭ হাজার বছর। কিছু কিছু মতামত অনুযায়ি অবশ্য প্রাচীন বাঁশিসমূহের বয়স অনুমান করা হয় প্রায় ৩৭ হাজার বছর। তবে অধিকাংশ ঐতিহাসিক বিশ্বাস করেন যে, বাদ্যযন্ত্রের আবিস্কারের সুস্পস্ট সময় খুঁজে বের করা অসম্ভব।
আকছারুজ্জামান নূরী বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এতো বিচিত্র বাদ্যযন্ত্র পাওয়ার কারণ হচ্ছে বাঁশ, কাঠ, লোহা, তামা, চামরা, মাটি, বেত ইত্যাদির সহজলভ্যতা ও প্রাচুর্য। লোক বাদ্যযন্ত্রের উপকরণ নিতান্তই প্রাকৃতিক এবং এর গঠন-প্রণালিও সহজ-সরল। লাউয়ের খোল, বেল, নারকেলের মালা, বাঁশ, কাঠ, নল, পাতা, সুতা, শিং, শংখ ও তার দিয়ে এ সব বাদ্যযন্ত্র তৈরি করা করা হয়।
বাসস/এইচএ/এসই/১৮২০/-জেজেড