মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার নির্দেশে নুসরাতের শরীরে আগুন দেয়া হয় : পিবিআই

694

ঢাকা, ১৩ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) : ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
এজাহারভুক্ত আট আসামীর মধ্যে পরিকল্পনাকারী শাহাদাৎ হোসেন শামীম (২০), নূর উদ্দিন (২০), কাউন্সিলর মাকসুদ আলম (৪৫), জোবায়ের আহমেদ (২০), জাবেদ হোসেন (১৯) ও আফসার উদ্দিনকে (৩৫) গ্রেফতার করা হয়েছে।
একই ঘটনায় আগে শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার সিরাজ উদ দৌলাকে নুসরাত হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এজাহারভুক্ত অপর আসামী হাফেজ আব্দুল কাদের পলাতক রয়েছে।
মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আজ এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে, এই হত্যাকান্ড মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার নির্দেশে ঘটেছে।
পিবিআইয়ের প্রধান বনজ কুমার মজুমদার নগরীর ধানমন্ডিতে আজ দুপুরে সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অধ্যক্ষের নির্দেশে এই হত্যাকান্ডের এ ঘটনা ঘটেছে। মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ৪ এপ্রিল আসামি নুর উদ্দীন ও শাহাদাৎসহ কয়েকজন কারাগারে গিয়ে সিরাজ উদ দৌলার সঙ্গে দেখা করেন। তখন সিরাজ উদ দৌলা নুসরাতকে কিছু একটা করার নির্দেশনা দেন। এরপর ৫ এপ্রিল সকালে নূর উদ্দিনসহ কয়েকজন মিলিত হয়ে পরিকল্পনা করেন। তারা সিদ্ধান্ত নেন, নুসরাতকে পুড়িয়ে মারা হবে।
পিবিআই জানিয়েছে, পরিকল্পনা মতো ৩টি বোরকা ও কেরোসিন আনার দায়িত্ব পড়ে শম্পা নামে এক ছাত্রীর ওপর। ওই ছাত্রী কথা মতো সকাল ৯টায় শাহাদাতের কাছে কেরোসিন ও বোরকা হস্তান্তর করে। সকাল ৯টার পর ওই মাদ্রাসার ভবনের ছাদে চারজন অবস্থান নেয়। পরিকল্পনায় অংশ নেয়া শম্পা ওরফে চম্পা নামে ওই ছাত্রী নুসরাতকে জানায়, তার সহপাঠী নিশাতকে ভবনের ছাদে মারধর করা হচ্ছে। ওই খবরে নুসরাত ছাদে গেলে তাকে আটকে দেয়া হয়। প্রথমে ওড়না দিয়ে বাঁধা হয়। এরপর কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়া হয়। মাদ্রাসার বাইরে নুর উদ্দিনের নেতৃত্বে ৪ বা ৫ জন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ও গেট পাহারা দেয়। আগুন দেয়ার পর সরাসরি অংশ নেয়ারা বোরকা পড়ে বের হয়ে যায়।
গত ৬ এপ্রিল নুসরাত জাহান রাফি মাদ্রাসায় পরীক্ষা দিতে গেলে এক দল দৃর্বৃত্ত তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে দগ্ধ অবস্থায় ওই দিন রাতে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। গত বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান।
এর আগে গত ২৭ মার্চ ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা করেন নুসরাতের মা।