কাঠমান্ডুতে বিধ্বস্ত ইউএস বাংলা উড়োজাহাজের ৭১ জন আরোহীর কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত

767

ঢাকা, ১২ মার্চ, ২০১৮ (বাসস) : কাঠমান্ডুতে বিধ্বস্ত ইউএস বাংলা উড়োজাহাজের ৭১ জন আরোহীর কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত হয়েছে। প্রাপ্ত খবর ও সরকারিভাবে এ তথ্য জানানো হয়।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম আজ রাজধানীতে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘আমাদের তথ্য অনুযায়ি বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের আরোহীদের ৪৫ জন নিহত হয়েছে।’
বাংলাদেশের বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলার একটি উড়োজাহাজ নেপালের ‘কাঠমান্ডু ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে’ (টিআইএ) অবতরণের সময় সেখানকার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিধ্বস্ত হয়। এ সময় উড়োজাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। বিধ্বস্ত বিমানটিতে পাইলট, কো-পাইলট ও ২ জন ক্রু এবং ৬৭ জন আরোহী ছিলো।
কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই উড়োজাহাজের যাত্রীদের মধ্যে ১৭ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জরুরি যোগাযোগের জন্য দূতাবাস কর্তৃপক্ষ হটলাইনও চালু করেছে।
ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ বলছে, ড্যাশ-৮ কিউ ৪০০ মডেলের ওই উড়োজাহাজে ৭১ জন আরোহীর মধ্যে ৬৭ জন ছিলেন যাত্রী, বাকিরা ক্রু।
যাত্রীদের মধ্যে বাংলাদেশের ৩২ জন, নেপালের ৩৩ জন, চীনের একজন ও মালদ্বীপের একজন যাত্রী ছিলেন বলে এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে প্রাপ্ত খবরে বলা হয়, দুর্ঘটনার পর-পরই নেপালী কতৃপক্ষ দংর্ঘটনা-কবলিত উড়োজাহাজে উদ্ধার কাজ শুরু করে।
নেপালের সরকারি মুখপাত্র নারায়ন প্রসাদ দাওদি বলেছেন, ‘আমরা বিধ্বস্ত উড়োজাহাজ থেকে লাশ ও আহতদের বের করছি’। বার্তা সংস্থা এএফপি’র রিপোর্টেও এ কথা জানানো হয়েছে। ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের পূর্বদিকের একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত বিমানটির স্থান থেকে কালো ধোয়ার কুন্ডলী ওড়ার ছবিও টেলিভিশনে দেখানো হয়।
এর আগে নেপালের বেসামরিক বিমান কতৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা জানান, বিধ্বস্ত বিমান থেকে মারাত্মক আহত ২১ জনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। উদ্ধার কাজে সহযোগিতার জন্য পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
কাঠমান্ডু বিমানবন্দরের মুখপাত্র প্রেমনাথ ঠাকুর জানান, বিধ্বস্ত বিমানটিতে ৪ জন ক্রু এবং ৬৭ জন যাত্রীসহ মোট ৭১ জন আরোহী ছিলো।
ইউএস-বাংলা এয়ার লাইন্সের জেনারেল ম্যানেজার (মার্কেটিং সাপোর্ট এন্ড পিআর) কামরুল ইসলাম আজ বাসস’র প্রতিনিধির কাছে কাঠমান্ডুতে বিমান দুর্ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ‘আমরা কাঠমান্ডু টিআইএ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। সেখানে উদ্ধার অভিযান চলছে।’
তিনি বলেন, আজ সোমবার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটের সময় এস-২-২১১ নম্বর ফ্লাইট (এজিইউ) ৬৭ জন যাত্রী নিয়ে নেপালের কাঠমান্ডুর উদ্দেশে হযরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যায়। স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২০ মিনিটে টিআইএ গিয়ে বিমানটি অবতরণকালে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
দুর্ঘটনার পর ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইমরান আসিফ সোমবার বিকেলে শাহজালাল বিমানবন্দরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদেরকে জানান, ‘বিমানটি উড্ডয়নের দেড় ঘণ্টা পর তারা দুর্ঘটনার সংবাদ পান। ঘটনার পর থেকে ত্রিভুবন এয়ারপোর্ট বন্ধ রয়েছে। তিনি বলেন, এয়ারপোর্ট খুললে ‘আমরা আমাদের একটি বিশেষজ্ঞ দল সেখানে পাঠাবো।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা হতাহতের বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নই। ফ্লাইটটিতে দুই শিশু, নারীসহ ৬৭ জন যাত্রী ছিলো। এ ছাড়া পাইলট, কো-পাইলট ও ২ জন ক্রু ছিলেন।’ যাত্রীদের মধ্যে ৩২ জন বাংলাদেশি, একজন মালদ্বীপ, একজন চাইনিজ বাকিরা নেপালি যাত্রী বলে তিনি উল্লেখ করেন।