জয়পুরহাটে ৮শ ২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ

477

জয়পুরহাট, ১১ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) : জেলার পাঁচ উপজেলায় চলতি ২০১৮-১৯ মৌসুমে ৮ শ ২০ হেক্টর জমিতে ভূট্টার চাষ হয়েছে। এতে ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার মেট্রিক টন ভুট্টা। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবারও বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বাসস’কে জানায়, মাটির গুণাগুণ অনুযায়ী ভুট্টা চাষ উপযোগী হওয়ায় জয়পুরহাট সদর উপজেলা, পাঁচবিবি ও আক্কেলপুর উপজেলায় ভুট্টার চাষ বেশি হয়ে থাকে। কৃষকদের ভুট্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। বিএডিসির পক্ষ থেকে কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের বীজ সরবরাহ করা হয়েছে । ভুট্টা চাষে তুলনামূলক লেবার ও পরিচর্যা খরচ কম হওয়ার কারণে লাভ হয় বেশি। জামালগঞ্জ এলাকার কৃষক জাহান আলী এবার ২ বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছেন। আবহাওয়া ভালো থাকায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি। ভুট্টা স্বল্প পানির চাহিদা সম্পন্ন ফসল হিসেবে জনপ্রিয়। ভুট্টা আবাদে বীজ বপনের ২৫-৩০দিন পর ১ম বার সেচ প্রয়োগ ও আগাছা দমন, ৫০-৫৫দিন পর ২য় বার, ৭০-৭৫দিন পরে ৩য় বার হালকা সেচ প্রয়োগ করলে বাম্পার ফলণ পাওয়া যায়। রোগ বালাই, পোকা মাকড়ের আক্রমণ খুবই কম হয় ভুট্টাতে। ফলে জেলায় দিন দিন ভুট্টার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি ২০১৮-১৯ মৌসুমে ৬ শ ৯০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হলেও ভুট্টার চাষ হয়েছে ৮ শ ২০ হেক্টর জমিতে । ভুট্টা ফসলের মোচা বা কব সংগ্রহের পরে গাছের অবশিষ্ট অংশ জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার হয়, ভুট্টা হতে আটা, ময়দা, গো খাদ্য তৈরিতে দেশে এর ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। মুরগি ও গো- খাদ্য তৈরির জন্য জয়পুরহাটের ফিডমিল গুলোকে জেলার বাইরে থেকে ভুট্টা আমদানী করতে হয়। আমদানীরোধে ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধিতে জয়পুরহাট জেলায় বিশেষভাবে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে কৃষিবিদ সুধেন্দ্রনাথ রায় বলেন কৃষকদের বিঘা প্রতি ৯ মেট্রিক টনের অধিক ফলনের উন্নত জাত সরবরাহ, চাষিদের উদ্ধুদ্ধকরণ ও পরামর্শ প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। জেলায় সুপারসাইন-২৭৬০ জাতের ভুট্টার নতুন জাত প্রবর্তনে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ব্যাপক কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে।
কৃষি বিভাগ জানায়, ৫০ শতাংশ একটি জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করার জন্য সরকারের রাজস্ব খাতের আওতায় প্রতিজন ভুট্টা চাষিকে ৪ কেজি বীজ, একশ কেজি ইউরিয়া সার, ৪০ কেজি এমওপি সার, ৫০ কেজি টিএসপি সার, ৫০ কেজি জিপসাম সার, আড়াই কেজি বোরণ সার, আড়াই কেজি দস্তা সার ও ১০ কেজি ম্যাগনেশিয়াম সালফেট সার দেওয়া হয়েছে। আগাছা দমন ও বালাইনাশকের জন্য এক হাজার টাকা ও কৃষক ব্রিফিং বাবদ ৫ শ টাকাসহ মোট ১ হাজার ৫০০ টাকা চেকের মাধ্যমে কৃষকের নিজ ১০ টাকার ব্যাংক একাউন্টে প্রদান করা হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে প্রযুক্তিগত কলাকৌশল ও পরামর্শ পেয়ে চাষাবাদ করতে পেরে অত্যন্ত খুশী বলে জানান ভুট্টা চাষিরা ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুধেন্দ্রনাথ রায় বলেন, জেলায় এবার ৮ শ ২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সদর উপজেলায় ৩২০ হেক্টর, পাঁচবিবিতে ৩৩৫ হেক্টর, আক্কেলপুরে ১০৫ হেক্টর, ক্ষেতলালে ৪০ হেক্টর ও কালাই উপজেলায় ২০ হেক্টর । আবহাওয়া ভালো থাকলে জেলায় এবার প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন ভুট্টার উৎপাদন হবে বলে আশা প্রকাশ করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।