বাসস প্রধানমন্ত্রী-৫ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সম্মিলিতভাবে লড়াই করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

576

বাসস প্রধানমন্ত্রী-৫ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
হাসিনা-জলবায়ু পরিবর্তন
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সম্মিলিতভাবে লড়াই করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

আমাদের কর্মময় বদ্বীপের অভ্যন্তরে প্রতিটি বর্ষা ও বন্যায় নদীর তীর ভেঙ্গে যায়। বহু পরিবার রাতারাতি ভূমিহীন ও অসহায় হয়ে পড়ে। হাজার হাজার একর মূল্যবান ফসলি-কৃষি জমি নদীগর্ভে হারিয়ে যায়। আর তাই এটি আশ্চর্যের বিষয় নয় যে, প্রতিবছর বিশ্বের প্রধান প্রধান নদীগুলো যে পরিমাণ পলি বহন করে তার প্রায় এক-চতুর্থাংশই বহন করে আমাদের নদীগুলো।
অনিয়মিত বৃষ্টি ও বৃষ্টিপাতের প্রাবল্য এবং বর্ধমান উষ্ণতা আমাদের জনগণের জন্য চাষাবাদকে কঠিন করে তোলে। আমি যখন বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে কথা বলি অনেকে শুষ্ক মৌসুমে অনাবৃষ্টি বা খরার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। ফেব্রুয়ারির গোড়ার দিকে যুক্তরাজ্যের আবহাওয়া অফিস পূর্বাভাস দিয়েছে যে, ২০১৪ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত দশকটি ১৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণতম হবে।
পরিবর্তনশীল জলবায়ু নতুন নতুন রোগের জন্ম দিচ্ছে। ম্যালেরিয়ার মতো রোগ- যা আমরা সফলভাবে নির্মূল করেছি- আবারো ফিরে আসার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। শস্য, প্রাণিসম্পদ ও হাঁস-মুরগির রোগের ক্ষেত্রেও একই ধরনের ঝুঁকি প্রতীয়মান। তাপমাত্রার ওঠা-নামা আমাদের মৎস্য শিল্পের জন্যও চ্যালেঞ্জিং। এসব কিছু উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমাদের মূল্যবান অর্জন এবং প্রশংসনীয় দারিদ্র্য নির্মূল প্রয়াসকে মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে।
এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশ আজ বিশ্বে চাল উৎপাদনে চতুর্থ, মাছ উৎপাদনে চতুর্থ, সবজি উৎপাদনে পঞ্চম স্থানে এবং ফল উৎপাদনে শীর্ষ দশের মধ্যে রয়েছে। আমরা বিশ্বকে উপহার দিচ্ছি এক জাদুকরী আঁশ পাট- যা জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সহায়তা করে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজনে আমাদের নিজস্ব প্রয়াসের অংশ হিসেবে আমরা ধকল সহিষ্ণু ফসলের জাতও উদ্ভাবন করেছি। আর এসব কিছু সম্ভব হয়েছে আমাদের কৃষকদের অব্যাহত মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তির কল্যাণে।
কিন্তু আমরা চিন্তিত যে, যে অগ্রগতি আমরা অর্জন করেছি তা হয়ত ধরে রাখতে পারবো না। বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে এক ধরনের অনীহা লক্ষ্য করছে। গত দশকজুড়ে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ কিভাবে নদীভাঙন, পানি সংকট, লবণাক্ততার অনুপ্রবেশ ও ভূ-গর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিক দূষণের কারণে তাদের পিতৃ-পুরুষের ভিটে-বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হয়ে যাচ্ছে তা আমি বিশ্ববাসীকে বলে আসছি।
বাসস/এসএইচ/অনুবাদ-এইচএন/২৩৫২/গিউ/-এবিএইচ