বাংলাদেশ-ভারত নৌ-চলাচল যোগাযোগের মাইলফলক হয়ে থাকবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

624

নারায়ণগঞ্জ, ২৯ মার্চ ২০১৯ (বাসস) : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারত নৌ-চলাচল যোগাযোগের মাইল ফলক হয়ে থাকবে।
ভারতের সাথে বাংলাদেশের নৌ চলাচল সত্তর বছর বন্ধ ছিলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে আবার এ পথে নৌ-চলাচল শুরু হলো। প্রধানমন্ত্রী নৌপথে একটি নতুন দিগন্ত রচনা করলেন। ৭০ বছর পরে আবার চালু হচ্ছে ক্রুজ শীপ। আজকের দিনটি যোগাযোগের মাইলফলক হয়ে থাকবে।
তিনি আজ শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের পাগলায় বিআইডব্লিউটিসি’র মেরী এন্ডারসন ভিআইপি জেটিতে ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা ক্রুজ সার্ভিস এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচীব আব্দুস সামাদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী এমপি, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া, পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ ও কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের শ্রমিক উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহমেদ পলাশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা থেকে এমভি মধুমতি নামের এই যাত্রীবাহী ক্রুজশীপ ভারতের কলকাতার উদ্দেশ্যে যাচ্ছে। একই দিন ভারত থেকে একটি ক্রুজ শীপ ঢাকা অভিমুখে রওনা করবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নদীগুলো ড্রেজিংয়ের যে পরিকল্পনা করেছেন তা বাস্তবায়িত হলে ঢাকায় যানবাহনের চাপ অনেক কমবে এবং ঢাকাগামী সড়ক রুটগুলির ওপরও চাপ কমবে।
তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে অভিন্ন নদী ব্যবস্থাপনার লক্ষে শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যৌথ নদী কমিশন। তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ভারতের সাথে করেন ঐতিহাসিক গঙ্গাপ্রবাহ চুক্তি। আর এবার তিনি নৌপথে একটি নতুন দিগন্ত রচনা করলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এমভি মধুমতি ক্রুজশীপে করে যাত্রীরা যেতে যেতে সুন্দরবনসহ দক্ষিণবাংলার অপার সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারবেন। উপভোগ করতে করতে যাত্রীরা কলকাতায় পৌঁছে যাবেন। নদীর দেশ বাংলাদেশ। আমাদের বাংলাদেশের যত শহর, যত বন্দর যত বাজার যত সভ্যতা তার সবই নদীর তীরে হয়েছে। নৌপথে ভ্রমণ ছিলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে প্রিয়। তিনি তার পরিবারের সদস্যদের ও জাতীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে চাঁদপুর, বরিশাল, গোয়ালন্দ হয়ে গোপালগঞ্জে তার বাড়িতে যাতায়াত করতেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তার পিতার সাথে সেই ভ্রমণের স্মৃতি এখনো মাঝে মাঝে আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন।
তিনি আরো বলেন, এই ক্রুজ শীপের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে এবং আমাদের এই যাত্রা অব্যহত থাকবে।
নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বুড়িগঙ্গার পানি পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনতে গুরুত্ব দিচ্ছেন। আমরা এজন্য কাজ করছি।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানকে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরন করি। দু’দেশের মধ্যে নতুন করে এই নৌ-চলাচল আমাদের বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরো দৃঢ় করবে।
বাংলাদেশের ‘এমভি মধুমতি’ এবং কলকাতার ‘মেসার্স আরভি. বেঙ্গল গঙ্গা’ জাহাজ দুটি বরিশাল, বাগেরহাটের মংলা, সুন্দরবন, খুলনার আন্টিহারা- ভারতের হলদিয়া রুট হয়ে কলকাতায় যাবে এবং নারায়ণগঞ্জে আসবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-কলকাতা এই ক্রুজ জাহাজের কেবিন ভাড়া ফ্যামিলি স্যুট (দুইজন) ১৫ হাজার টাকা, প্রথম শ্রেণি (যাত্রীপ্রতি) ৫ হাজার টাকা, ডিলাক্স শ্রেণী (দুজন) ১০ হাজার টাকা, ইকোনমি চেয়ার (যাত্রীপ্রতি) ২ হাজার টাকা এবং সুলভ শ্রেণী বা ডেক (যাত্রীপ্রতি) ১৫০০ টাকা।